সূচিপত্র
বিজ্ঞানের ২৫ আবিষ্কার এবং আবিষ্কারকের নাম
শুরুর দিকে মানুষ ছিলো অনেক অসহায়। তারা বাস করতো বনে জঙ্গলে। বিভিন্ন পশুপাখি শিকার করে খাদ্য সংগ্রহ করতো। আস্তে আস্তে মানুষ বিভিন্ন প্রযুক্তি আবিষ্কার করলো। তৈরি করলো নানা জিনিস। ফলে মানুষের জীবন হলো আরো সহজ, আরো নিরাপদ।
আদিম যুগের সেইসব আবিষ্কার থেকে আধুনিক যুগের নিত্যনতুন প্রযুক্তি, সবই মানব সভ্যতাকে দিয়েছে অন্য এক রূপ। মানুষ এমন কিছু জিনিস আবিষ্কার করেছে যেগুলো না থাকলে আজকের পৃথিবী আমরা যেমনটা দেখছি তেমনটা হয়তো হতো না।
চলুন জেনে নেই ঠিক এমনই আবিষ্কার সম্পর্কে যেগুলো বদলে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে।
১) ইলেকট্রন’কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর-জে.জে. টমসন
(ইংল্যান্ডের বিখ্যাত বিজ্ঞানী জে.জে. টমসন ইলেকট্রন আবিস্কার করেন 1687 সালে)।
২) পেনিসিলিন’ – কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর-আলেকজান্ডার ফ্লেমিং
(আলেকজান্ডার ফ্লেমিং ‘পেনিসিলিন’ আবিষ্কার করেন ১৯২৮ সালে)।
৩) মাইক্রোফোন কে আবিস্কার করেন?
উত্তর- বর্ণিলর
(১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী বর্ণিলর মাইক্রোফোন আবিস্কার করেন)।
৪) দূরবীক্ষণ যন্ত্র’- কে আবিস্কার করেন?
উত্তর-গ্যালিলিও
(গ্যালিলিওর পুরো নাম গ্যালিলিও গ্যালিলি।
* ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে ইতালীয় বিজ্ঞানী গ্যালিলিও ‘দূরবীক্ষণ যন্ত্র’- আবিস্কার করেন)।
৫) কোন বিজ্ঞানী ‘মাইক্রোস্কোপ’ আবিস্কার করেন?
উত্তর- জ্যানসেন
(ইতালীয় বিজ্ঞানী জ্যানসেন ১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে মাইক্রোস্কোপ’ আবিস্কার করেন)।
৬) টেলিস্কোপ’- কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর-লিপারেস
(নেদারল্যান্ডসের এই বিজ্ঞানী 1608 খ্রিস্টাব্দে টেলিস্কোপ আবিস্কার করেন)।
৭)ডায়োনামা’- কে আবিস্কার করেন?
উত্তর-পিকিনোত্তি
(১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে ইতালীয় বিজ্ঞানী পিকিনোত্তি ‘ডায়োনামা’-আবিস্কার করেন)।
৮) মুদ্রণ যন্ত্র’ বা ‘ছাপাখানা’ – কে আবিস্কার করেন?
উত্তর-গুটেনবার্গ
9)কোন বিজ্ঞানী থার্মোমিটার আবিস্কার করেন?
উত্তর–গ্যালিলিও
(১৫৯৩ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও গ্যালিলি থার্মোমিটার আবিস্কার করেন। এছাড়াও তিনি ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিস্কার করেন)।
১০) টকি মেশিন কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর– আলভা এডিসন
(মার্কিন বিজ্ঞানী ১৮৮৪ সালে টকি মেশিন আবিস্কার করেন)।
১১) আণবিক বোমা কে আবিস্কার করেন?
উত্তর– অটো হান
(মার্কিন বিজ্ঞানী অটো হান ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে আণবিক বোমা আবিষ্কার করেন)।
12) প্রেসার কুকার কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর– রবার্ট বয়েল
(ফ্রান্সের বিজ্ঞানী রবার্ট বয়েল ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দে প্রেসার কুকার আবিষ্কার করেন)।
১৩) পেট্রোল ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন কে?
উত্তর–নিকোলাস অটো
(1876 খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী পেট্রোল ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন)।
১৪) কোন বিজ্ঞানী ‘প্লবতা’-আবিষ্কার করেন?
Ans-আর্কিমিডিস
(সিসিলির অধিবাসী আর্কিমিডিস ২৮৭ খ্রিস্টপূর্বাদে প্লবতা’-আবিষ্কার করেন)।
১৫) কে D.D.T. আবিষ্কার করেন?
উত্তর-পল মূলার
(1941 খ্রিস্টাব্দে সুইজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী পন মূলার D.D.T. আবিষ্কার করেন)।
১৬)ক্লোরোফর্ম আবিষ্কার করেন কে?
উত্তর–সিম্পসন
(১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সিম্পসন ক্লোরোফর্ম আবিষ্কার করেন)।
১৭) ফনোগ্রাফ কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর-আলভা এডিসন
(মার্কিন গবেষক আলভা এডিসন ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ফনোগ্রাফ আবিষ্কার করেন)।
১৮) কোন বিজ্ঞানী ‘রক্ত সঞ্চালন’- আবিষ্কার করেন?
উত্তর–উইলিয়াম হার্ভে
(ব্রিটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্ভে ১৬২৮ খ্রিস্টাব্দে রক্ত সঞ্চালন’- আবিষ্কার করেন)।
১৯) সেফটিপিন কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর– ওয়াটার হাল্ট
(মার্কিন গবেষক ওয়াটার হাল্ট ১৮৪৯ সালে সেফটিপিন আবিষ্কার করেন)।
২০) ‘রবার’- কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর– চার্লস ম্যাকিনটোস
(১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী চার্লস ম্যাকিনটোস রবার আবিষ্কার করেন)।
২১. কোন বিজ্ঞানী “রক্তের গ্রূপ’-আবিষ্কার করেন?
উত্তর– কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার
(অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে রক্তের গ্রূপ’-আবিষ্কার করেন)।
২২) ‘ব্যাকট্রিয়া’- কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর–লিউয়েন হুক
(১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানী লিউয়েন হুক “ব্যাকট্রিয়া”-আবিষ্কার করেন)।
২৩) ইথার কে আবিষ্কার করেন?
উত্তর– লং
(মার্কিন গবেষক লং ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ইথার আবিষ্কার করেন)।
২৪) কুষ্ঠের জীবাণু কে আবিস্কার করেন?
উত্তর–হ্যানসেন (১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে নরওয়ের বিজ্ঞানী হ্যানসেন কুষ্ঠের জীবাণু আবিষ্কার করেন)।
২৫) প্রথম কৃত্রিম কিডনি আবিষ্কাট
বাংলাদেশের বিজ্ঞানী শুভ রায় বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম কিডনি তৈরি করেছেন। এটি চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক অসামান্য কীর্তি। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার সহযোগী অধ্যাপক শুভ রায় ১০ বছর আগে তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে কৃত্রিম কিডনি তৈরির কাজ শুরু করেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দলটি ঘোষণা দেয়, তারা কৃত্রিম কিডনি তৈরি করে তা অন্য প্রাণীর দেহে প্রতিস্থাপন করে সফল হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে আরো ব্যাপকভাবে বিভিন্ন প্রাণীতে প্রতিস্থাপন করে পরীক্ষার পর এটি মানবদেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন শুভ রায়।
বাংলাদেশে প্রতিবছর এক কোটি ৮০ লাখ লোক কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার রোগীর কিডনি সম্পূর্ণরূপে বিকল হয়, যাদের মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার রোগীই মারা যায়। কিডনি বিকল রোগীদের কিডনি সংযোজন ও ডায়ালাইসিস দুটোই অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আবার ডায়ালাইসিস আসল কিডনির মাত্র ১৩ ভাগ কাজ করে। জটিল কিডনি রোগের তাই কিডনি প্রতিস্থাপনই সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা। তবে কিডনি সংযোজনের বড় সমস্যা দাতার অভাব।
বিজ্ঞানী শুভ রায়ের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। শুভ রায় মাইক্রো ইলেকট্রো মেকানিক্যাল সিস্টেম টেকনোলজি ডেভেলপিং স্পেশালিস্ট। এর আগে ম্যাসাচুসেটসের ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির টপ হানড্রেড ইনোভেটর ২০০৩ অ্যাওয়ার্ড পান তিনি।
শেষ কথাঃ এ কথা সত্য যে, বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আবেগ। এ নিয়ে আক্ষেপ করে কোনো লাভ নেই। কারণ আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান ছাড়া মানুষের পক্ষে এক মুহুর্তও চলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ যেকোনো পড়া মনে রাখার বৈজ্ঞানিক উপায়